একজন শিক্ষিকার সন্তান ছিলেন এন্ড্রু কিশোর

বিশ্ববিদ্যালয়

‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, রইব না আর বেশিদিন তোদের মাঝারে।’ নব্বই দশকের সাড়া জাগানো এই প্রিয় গানের শিল্পী আজ ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পরলোকে। জীবনের গল্প, আছে বাকী অল্প, ওগো বিদেশিনী তোমার চেরি ফুল দাও, আমার শিউলি নাও, পদ্মপাতার পানি নয়, দিন যাপনের গ্লানি নয়, হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস ইত্যাদি প্রায় পনের হাজারো গানের প্লেবাক কিং শিল্পী এন্ড্রু কিশোর আর এ জগতে নেই।
আজ সোমবার ০৬ জুলাই ২০২০ ইং তারিখ সন্ধ্যায় ৭টা ১৩ মিনিটের দিকে রাজশাহী নগরীর মহিষবাথান এলাকায় তার বোন ডা. শিখা বিশ্বাসের বাড়িতে জীবনের শেষ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষে গত ১১ জুন রাতে বিশেষ এক ফ্লাইটে দেশে ফেরেন গুনী এই শিল্পী।

এরপর থেকে রাজশাহীতে তার নিজের বোনোর বাসায় থাকছিলেন। তার দেখাশুনার দায়িত্বে ছিলেন নিজ বোনজামাই ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস।
গুনি এই শিল্পী মৃত্যুতে ‘দৈনিক বিদ্যালয়’ পবিরার ব্যথিত!
এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক তার বর্ণাঢ্য জীবনের কিছু জানা অজানা তথ্যঃ

পুরো নামঃ এন্ড্রু কিশোর।
জন্ম তারিখঃ নভেম্বর ০৪ নভেম্বর ১৯৫৫.
উচ্চতাঃ ০৫ ফুট ০৫ ইঞ্চি।
জন্মস্থানঃ রাজশাহী শহরের শ্রীরামপুর মিশন হাসপাতাল এলাকা, রাজশাহী, বাংলাদেশ।
বাবাঃ খিতিশ চন্দ্র বাড়ই।
মাঃ মিনু বাড়ই, পেশায় একজন শিক্ষক।
বোনঃ ডা. শিখা বিশ্বাস।
ভাইঃ পিটার স্বপন কুমার বাড়ই।
স্ত্রীঃ লিপিকা এন্ড্রু (ইতি)। তিনি পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার।
সন্তানঃ জে এন্ড্রু (সপ্তক) এবং মিনিম অ্যান্ড্রু (সংজ্ঞা)।
ধর্মঃ খ্রিস্টান।
রাশিঃ বৃশ্চিক।
পেশাঃ প্লেব্যাক সিঙ্গার।

শিল্পী এন্ড্রু কিশোরের মা মিনু বাড়োই পেশায় একজ শিক্ষিকা ছিলেন। তিনি কিশোর কুমারের ভক্ত হওয়ায় ছেলের নামের সাথে ‘কুমার’ শব্দটি জড়িয়ে রেখেছিলেন।

সংগীত জীবনে তিনি মোট আট বার জাতীয় পুরুষ্কার প্রাপ্ত হন।

১৯৮২ সনে শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী ‘বড় ভালো লোক ছিল’ চলচিত্রের জন্য বিজয়ী।
১৯৮৭ সনে শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী ‘সারেন্ডার’ চলচিত্রের জন্য বিজয়ী।
১৯৮৯ সনে শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী ‘ক্ষতি পূরন’ চলচ্চিত্রের জন্য বিজয়ী।
১৯৯১ সনে শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’ চলচ্চিত্রের জন্য বিজয়ী।
১৯৯৬ সনে শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী ‘কবুল’ চলচ্চিত্রের জন্য বিজয়ী।
২০০০ সনে শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী ‘আজ গায়ে হলুদ’ চলচ্চিত্রের জন্য বিজয়ী।
২০০৭ সনে শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী ‘সাজঘর’ চলচ্চিত্রের জন্য বিজয়ী।
২০০৮ সনে শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী ‘কি যাদু করিলা’ চলচ্চিত্রের জন্য বিজয়ী হন।

READ MORE  বাংলাদেশিদের স্কলারশিপের সুযোগ অস্ট্রেলিয়ায়

আব্দুল আজিজ বাচ্চুর অধীনে প্রাথমিকভাবে সঙ্গীত এর পাঠ গ্রহণ শুরু করেন। ৭১ সালের পর তিনি নজরুল সংগীত, রবীন্দ্র সংগীত , আধুনিক গান, লোক সংগীত ও দেশাত্মবোধক গানে রাজশাহী রেডিওতে তালিকাভুক্ত শিল্পী ছিলেন।

তিনি রাজশাহীবিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। দীর্ঘ দিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন। অবশেষে সবাইকে কাঁদিয়ে প্রায় ১৫ হাজার গানের এই গুনী শিল্পী ২০ বছরের সংগীতময় জীবন ও দীর্ঘ ৬৬ বছর জীবনের অবসান ঘটান ০৬ জুন ২০২০ সনের রোজ সোমবার ৬ টায় ৫৫ মিনিটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

For any sponsor contact us email: ajkarnews@gmail.com