সমাপনী, ইবতেদায়ী, JSC, JDC পরীক্ষা কী হবে?

প্রাথমিক

দৈনিক বিদ্যালয় | নিউজ ডেস্ক |

গত ১৭ ই মার্চ থেকে বন্ধ আছে বাংলাদেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহ।
গত ২০০৫ সাল থেকে উপজেলা পর্যায়ে চলে আসছে এই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা। যদিও এটি ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রবর্তিত একটি পাবলিক পরীক্ষা যার মাধ্যমে দেশব্যাপী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একই প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এ পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাই পরবর্তীকালে নিম্ন মাধ্যমিকের ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধিনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিবছর এই পাবলিক পরীক্ষাটি আয়োজন করে থাকে।

এই পরীক্ষা অনুষ্ঠান নিয়ে বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে দেখা দিয়েছে সংশয়। এটি প্রতিবছরের নভেম্বর মাসের মাঝের সাঝে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। প্রতি বছর বিদ্যালয় থেকে বিদায়ী শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয় সমুহে এ নিয়ে থাকে বিশেষ তোড় জোড়।

বাংলাদেশের চলতি করোনার অবস্থা বিবেচনায় এ নিয়ে চলতি বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা বাতিলের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সার সংক্ষেপ পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ দুটি পরীক্ষা তথা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য সমাপনী ও ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সমাপনী পর্যায়ের পরীক্ষা শুধুমাত্র এ বছরের জন্য বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে সাড়ে ০৫ মাসের মত বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় পাঠদান ব্যাহত হওয়ায় এবং কবে নাগাদ বিদ্যালয় খোলা সম্ভব হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এতে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সমাপনী পরীক্ষা নেওয়ার কারণে বার্ষিক মেধাবৃত্তি দেওয়া সম্ভব হবে না। হ্যা, তবে উপবৃত্তি কার্যক্রম চালু থাকবে।

সমাপনী ও ইবতেদায়ী পরীক্ষা না নেওয়ার প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন মিললে সমাপনী পরীক্ষার পরিবর্তে বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। এই প্রস্তাবটি মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবং মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম আল হোসেনের স্বাক্ষর শেষে এ সংক্রান্ত সার সংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের উপরই নির্ভর করছে সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা বাতিলের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

READ MORE  প্রাথমিক শিক্ষকদের অনলাইনে বদলী শুরু হওয়ার সময় ঘোষণা

আরো পড়ুনঃ একই বিদ্যালয়ে ৩ থেকে ৫ বছরের বেশি থাকতে পারবেন না প্রাথমিক শিক্ষকরা

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম আল হোসেন মঙ্গলবার বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে এ বছরের সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণ না করার প্রস্তাব সংক্রান্ত সার সংক্ষেপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন!’

প্রস্তাবের সার সংক্ষেপে বলা হয়েছে, গত ৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পঞ্চম শ্রেণীর পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেখানে সমাপনী পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত হয়। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ২০২০ সালের সমাপনী পরীক্ষা না নিয়ে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ছাত্র, ছাত্রীদের মূল্যায়ন করে পরবর্তী শ্রেণীতে উন্নীত করণ করা যেতে পারে। এ ছাড়া বর্তমান সনে সমাপনী অনুষ্ঠিত না হলে সমাপনী পরীক্ষার ভিত্তিতে দেওয়া মেধা ভিত্তিক বৃত্তি দেওয়া সম্ভব হবে না। তবে উপবৃত্তি কার্যক্রম চলমান থাকবে। এ অবস্থায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ২০২০ সালের সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা গ্রহণ না করার বিষয়টিতে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন প্রয়োজন।

সার সংক্ষেপে আরও বলা হয়, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বেশ কিছু দেশে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় খুলেছে। যথা -জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ায় বিদ্যালয়গুলো খুললেও সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে আবার তা বন্ধ করা হয়েছে।

করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশে এখনও বিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সেপ্টেম্বর মাসে বিদ্যালয় খুলে দেয়া হলেও অভিভাবকরা তাদের ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে নাও পাঠাতে পারেন বলে সংশয় আছে। এতে যারা বিদ্যালয়ে যাবে এবং যারা যাবে না, তাদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি হবে, অনেকে পিছিয়ে পড়বে।

আরো পড়ুনঃ ফেসবুক আইডি হ্যাক ও ব্লক হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমিঃ নেপ প্রণীত সংশোধিত কারিকুলাম অনুযায়ী পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা নিতে হলে আরও ৫০ কার্য দিবস পাঠদান করা প্রয়োজন। সেপ্টেম্বর মাসে বিদ্যালয় সমূহ খোলা না গেলে যে কার্য দিবস পাওয়া যাবে, তাতে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পঞ্চম শ্রেণীর বাকি পাঠদান সম্ভব হবে না।

READ MORE  জাতীয়করণকৃত শিক্ষক না পদোন্নতি, না সিলেকশন গ্রেড, না টাইমস্কেল পাবেন : হাবিবুর রহমান

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সাথে অনুষ্ঠিত একই বৈঠকে চলতি ২০০০ সালের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট JSC ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট JDC পরীক্ষাও না নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সারসংক্ষেপ আগামী দুই এক দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানোর কথা রয়েছে।

সবমিলিয়ে এ সকল পরীক্ষা এ বছর হবে কি হবে না; এটি নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের উপর।

(ডি বি আর আর)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *