প্রাথমিকের ৪৮৭২০ জন শিক্ষকের টাইমস্কেল বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত : নোটিশ প্রদান

প্রাথমিক

দৈনিক বিদ্যালয় ডেস্কঃ ১৯৭৩ সালে প্রায় ৩৭ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকুরী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয়করণ করেন। এর সূত্রধরে ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি একটি শিক্ষক মহা সমাবেশে ২৬ হাজার ১৯৩টি রেজিস্টার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ১ লাখ ৪ হাজার ৭৭২ জন শিক্ষকে জাতীয়করণের আওতায় আনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিগ্রহণকৃত প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরির শর্তাদি নির্ধারণ বিধিমালা এস.আর.ও নং-৩১৫ আইন ২০১৩ প্রণয়ন পূর্বক গেজেট প্রকাশ করে। এরপর থেকে সেই বিধিমালার ২ (গ) নং বিধিতে ৫০ শতাংশ বেসরকারি চাকরি কার্যকর ধরে বেতন, ভাতা, টাইম স্কেল, জ্যেষ্ঠতা, পদোন্নতিসহ সব প্রকার সুবিধাদি ভোগ করে আসছেন নব্য জাতীয়করণকৃত শিক্ষকবৃন্দ। 

এর পর কিছুদিন আগে মহামান্য হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ নির্দেশ থাকা সত্যেও ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের টাইমস্কেল বাতিল করে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেওয়ার নির্দেশ বহাল রাখায় সংশ্লিষ্টদের প্রতি একটি আদালত অবমাননার নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। এই নোটিশটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, উপ সচিব রওনক আফরোজা সুমা,  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন এবং হিসাব মহানিয়ন্ত্রক, মো. জহিরুল ইসলামকে পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) সেলিনা আক্তার শিক্ষকদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ নোটিশ পাঠান। 

নোটিশ প্রদানের বিষয়ে মো. হাবিবুল হক, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি সত্যতা স্বীকার করেন। এবং জানান অত্র সমিতির মহাসচিব মো. মুনসুর আলী। আমাদের এই সমিতির পক্ষেই দুটি রিট মামলা করা আছে। তিনি আরও বলেন, এই টাইমস্কেল বাতিলের সিদ্ধান্ত আমরা যারা নব্য জাতীয়করণকৃত শিক্ষকবৃন্দ, তাদেরকে ঠকানোর একটি কৌশল।

নোটিশটিতে আগামী ০৭.১০.২০২০ তারিখের মধ্যে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বাস্তবায়ন চাওয়া হয়েছে। অন্যথায় আদেশ বাস্তাবায়ন না করা হলে বিবাদীগণের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। 

READ MORE  প্রাথমিক শিক্ষক বদলি নীতিমালা ২০২২ সংশোধন : দ্রুত আসছে সুযোগ

উপরোক্ত গেজেটের বুনিয়াদে শিক্ষকরা টাইমস্কেল পেয়ে আসছেন। ইতিমধ্যে চলতি বছরের ১২ আগস্ট তারিখে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি আদেশ জারি করে। ওই আদেশের মাধ্যমে ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের ক্ষেত্রে টাইম স্কেল বাতিল করে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।

পরবর্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকরা আদেশটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ৩১ আগস্ট হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির যিনি সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি রাজশাহীর গাঙ্গোপাড়া বাগমারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকরা বাদী হয়ে এ রিট দায়ের করেন। গত ৩১ আগস্ট ওই রিটের শুনানি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশটি ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের বেঞ্চ।

হাইকোর্টের আদেশে সম্প্ররকিত অনুলিপিটি গত ০৮.০৯.২০২৯ তারিখে অর্থ মন্ত্রণালয় সহ মামলার সংশ্লিষ্ট বিবাদীদেরকে পাঠানো হয়। এরপরও গত ২৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ উপেক্ষা করে পুনরায় অর্থ মন্ত্রণালয় ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের ক্ষেত্রে টাইম স্কেল বাতিল করে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেওয়ার জন্য হিসাব মহানিয়ন্ত্রককে নির্দেশ প্রদান করে। পরেক্ষণে আদালতের রায় বাস্তাবয়ন চেয়ে সংশ্লিষ্ট বাদী কর্তৃক বিবাদীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

ডিবি/আরআর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *