মসজিদে ঢুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগে একজনকে পুড়িয়ে দিল জনতা

বিবিধ

দৈনিক বিদ্যালয় ডেস্ক : লালমনিরহাট বুড়িমারী স্থল বন্দর কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রবেশ করে কোরআন-হাদিস অবমাননার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মেরে লাশ পুড়িয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতেপুলিশের ফাঁকা গুলি, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর মাগরিবের সালাতের আগে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রামের বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনার পরে যুবকের মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেয়া হয় এবং আগুন নেভাতে গেলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২ জন অপরিচিত আসরের নামাজের সময় মসজিদে প্রবেশ করে এবং নামাজ শেষে তারা মসজিদের মধ্যে অস্ত্র আছে বলে দাবি করে। সে সময় তারা কোরআন শরীফ ফেলে দেয় এবং অবমাননা করে। এমন অভিযোগে একজনকে ধরে ইত্তেজিত জনতা পিটিয়ে হত্যা করে আগুনে পুটিয়ে দেয়। সাথে থাকা অপরজনকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। উক্ত আটক ব্যক্তির নাম রেজা, যার আনুমানিক বয়স ৩৮-৪০ হতে পারে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের একজন ওয়ার্ড সদস্য সুত্রে জানা গেছে, আসরের নামাজ শেষে মসজিদে দুই জন অপরিচিত ব্যক্তি আসে এবং মসজিদের খাদেম জুবেদ আলীকে সঙ্গে নিয়ে তাদের একজন মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে কোরআন শরীফ ও হাদিস শরীফ রাখার তাকে অস্ত্র আছে বলে তল্লাশি শুরু করে। এক পর্যায়ে মসজিদের সামনের কাতারে থাকা কয়েকজন মুসল্লি মসজিদের প্রবেশ করে উক্ত ব্যক্তিকে এবং বারান্দায় থাকা অপঅর ব্যক্তিকে মারধর করে। এরপর খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুই ব্যক্তিকে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষের ভেতরে ঢুকে তালা লাগিয়ে রক্ষার চেষ্টা করেন। তবে মুহূর্তের মধ্যে শত শত লোকজন জড়ো হয়ে যায়। এরপর পাটগ্রাম থানার ওসি, ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উক্ত বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ফোন করে ঘটনাস্থলে আসতে বলেন তিনি। তন্মধ্যে উত্তেজিত জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের দরজা-জানালা ভেংগে ২ জনের মধ্য থেকে এক জনকে বাইরে এনে পিটিয়ে হত্যা করে।

READ MORE  একজন সাহসী রাজনীতিবিদ

এরপর সেই লাশ নিয়ে লালমনিরহাট-বুড়িমারী জাতীয় মহাসড়কের বুড়িমারী প্রথম বাঁশকল এলাকায় কাঠখড়ি ও পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। জানাগেছে সেখানে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার উত্তেজিত জনতা হাজির হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা লোক দুই জনের সঙ্গে কথা বলার সময় পাইনি। তাই পরিচয় নেওয়া সম্ভব হয়নি। এমন কি তাদের ধর্ম সম্পর্কেও জানা সম্ভব হয়নি।’

এ বিষয়ে মসজিদের খাদেম জুবেদ আলীর বক্তব্য হল, তাকে র‌্যাব-আর্মির পরিচয় দিয়ে বলেছে যে, কোরআন-হাদিস রাখার তাকে নাকি অস্ত্র আছে। এবং এ কথা বলে তাদের একজন সেই অস্ত্র খোঁজ করা শুরু করে। এক পর্যায়ে সবকিছু তছনছ করে অভিযুক্ত ব্যক্তি।

এ ঘটনায় বুড়িমারি ইউনিয়ন এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে ও কয়েক জায়গায় অগ্নি সংযোগ করার কথাও জানা গেছে।

তথ্যসূত্র : সময়ের কণ্ঠস্বর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *