মাদ্রাসার সহকারী গ্রন্থাগারিক পদের নিয়োগ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়ে যাচ্ছে

মাদ্রাসা

দৈনিক বিদ্যালয় : গত ১লা সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের এনেক্স ১৯ নং কোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং এ কে এম জহিরুল হকের বেঞ্চ মাদ্রাসায় সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়োগে ৩ মাসের স্থগিতাদেশসহ উক্ত পদের নিয়োগে শিক্ষাগত যোগ্যতায় কেন সমমান রাখা হবে না মর্মে রুল জারি করেন।”

উল্লেখ্য, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ এ মাদ্রাসায় সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়োগে শিক্ষাগত যোগ্যতায় উল্লেখ করা হয় ” উক্ত পদের জন্য প্রার্থীকে গ্রন্থাগার বিজ্ঞান ডিপ্লোমা এবং ফাজিল পাশ হতে হবে অথবা আরবি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে।” অথচ ২০১০ সালের নীতিমালায় উক্ত পদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল “গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা এবং স্নাতক/সমমান ডিগ্রি।”

সুতরাং নতুন নীতিমালার ফলে জেনারেল শিক্ষায় শিক্ষিত ডিপ্লোমাধারীরা মাদ্রাসায় সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে আবেদনের যোগ্যতা হারায়। এতে করে সারাদেশ থেকে জেনারেল শিক্ষিত ডিপ্লোমাধারীদের পক্ষথেকে ৪০ জন বাদী হয়ে উক্ত নীতিমালার বিরুদ্ধে রিট মামলা দায়ের করেন।
মামলাটিতে শিক্ষামন্ত্রণালয় সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব, মাদ্রাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) সহ মোট ৪ জনকে বিবাদী করা হয়।

এতে বাদীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন। মামলার স্থগিতাদেশের জন্য উক্ত পদের চলমান নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। চলমান স্থগিতাদেশের মধ্যেই বৃহস্পতিবার (২৯/১০/২০ তারিখ) বাদীদের পক্ষ থেকে আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বিবাদীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য উক্ত পদে নিয়োগ স্থগিতাদেশের আইনী নোটিশ প্রেরণ করেছেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।

স্থগিতাদেশ বৃদ্ধিকরণের আইনী নোটিশ প্রেরণ সম্পর্কে আইনজীবী বলেন- আমরা কোর্ট থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্থগিতাদেশ পেয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানের করোনা পরিস্থিতির কারণে কোর্টের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ধীর গতির কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব না, তাই প্রধান বিচারপতি মহোদয়ের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা উচ্চ আদালত পূর্ণাঙ্গরূপে খোলার তারিখ পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বৃদ্ধিকরণ কার্যকর করতে বিবাদীদের অবগতকরণ মর্মে আইনী নোটিশটি প্রেরণ করলাম। তবে মামলা নিষ্পতি হলে স্থগিতাদেশটি বাতিল বলে গণ্য হবে।
উল্লেখ্য ১১ই আগস্ট-২০ তারিখে প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়।(যার বিজ্ঞপ্তি নং-১৫ এবং স্মারক নং- ৩৫৯৬)।

READ MORE  আলিম পরীক্ষার পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাস প্রকাশ : লিংক সহ

যাতে উল্লেখ করা হয়- “যে সকল ফৌজদারী মামলায় আসামীকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জামিন দেওয়া হয়েছে বা যে সকল মামলায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা/স্থিতিবস্থা/স্থগিতাদেশ-এর আদেশ প্রধান করা হয়েছে, সে সকল মামলার কার্যকারিতা উচ্চ আদালত পূর্ণাঙ্গরূপে খোলার তারিখ পর্যন্ত বর্ধিত হয়েছে মর্মে গণ্য হবে।”

এ সম্পর্কে মামলার বাদীদের মধ্যে মো. আবু বক্কর সিদ্দিক (২নং পিটিশনার) এর সাথে যোগাযোগ করলে উনি জানান- “আমরা মহামান্য হাইকোর্ট থেকে উক্ত পদের নিয়োগে অস্থায়ী স্থগিতাদেশ পেয়েছিলাম। ইতোপূর্বে করোনার কারণে হাইকোর্ট অনেক দিন বন্ধ ছিল, আবার বর্তমানেও কোর্ট তার পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালাতে পারছে না, এতে সৃষ্ট মামলা জটের কারণে আমাদের মামলার নিষ্পতি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করা সম্ভব না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই আমাদের নিয়োগ স্থগিতাদেশ বৃদ্ধিকরণ প্রয়োজন। মাননীয় প্রধান বিচারপতির আদেশ বলে আমরা পূর্ণাঙ্গরূপে স্থগিতাদেশের যে গ্রহণযোগ্যতা পেলাম তা আমাদের সমমান আদায়ের জন্য বড় ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি। আমরা কোর্টে সমমানের জন্য মামলা চালাবো আর মাদ্রাসাগুলোতে উক্ত পদে নিয়োগ দান কার্যক্রম চলমান থাকবে তা কখনই কাম্য ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তবে আমরা আশাকরি মহামান্য হাইকোর্ট আমাদের শতভাগ যৌক্তিক দাবির পক্ষে দ্রুত রায় প্রদান করে বঞ্চিতদের চাকুরির ক্ষেত্রে সমান-সুযোগ নিশ্চিত করবেন।

উল্লেখ্য, অত্র মামলার আইনজীবী, সৈয়দ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও বাদী ও মামলা পরিচালনাকারী, মো. আবু বক্কর সিদ্দিক।

ডিবি /আর আর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *