মাত্র দশ টাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহ জাতীয়করণ

দৈনিক বিদ্যালয় :: বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে এই এগিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষার বিকল্প নেই। টেকসই উন্নয়ন না হলে সে উন্নয়ন বিফলে যায়। শিক্ষার মান ও এক্ষেত্রে টেকসই দরকার। এক্ষেত্রে টেকসই শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য দরকার শিক্ষকের মানোন্নয়ন।

শিক্ষক যদি আন্তরিক না হয়, সেক্ষেত্রে শিক্ষার কোয়ান্টিটি বাড়লেও বাড়েনা কোয়ালিটি এডুকেশন। আর টেকসই কোয়ালিটি এডুকেশন না হলে সার্বিক উন্নয়ন বিফল। এজন্য শিক্ষকের মানসিক স্থিতিশীলতা একান্ত কাম্য। শিক্ষকে অর্থনৈতিক সমর্থন দিতে পারলে কোয়ালিটি এডুকেশন ও পাওয়া সম্ভব।

এদেশে শিক্ষায় বড় বড় পরিবর্তন পরিকল্পনা বেহেস্তে যায় শিক্ষকদের আন্তরিকতা না থাকার কারণে। ক্রমবর্ধমান দ্রব্য মূল্যের বাজারে শিক্ষকদের সংসারের ঘানি টানতে বেশ কষ্টই হয়। শিক্ষার্থীদের শিখন শেখানো কার্যক্রমে মনোনিবেশ করানোর সময়ও হয়ত ভাবতে হয় অমুকের দেনার টাকাটা এমাসের বেতন থেকে পরিশোধ করা সম্ভব হবে কিনা? এই অবস্থার মধ্য দিয়ে কোয়ালিটি এডুকেশন কোনভাবে সম্ভব নয় বলে মনে করেন বিজ্ঞ জনেরা।

এবার আসা যাক আমাদের মূল আলোচনা। আর তা হল শিক্ষকদের জাতীয় করণ করলে সরকারের লাভ ক্ষতির বিষয়টি।

একটি সমীক্ষা বলছে শিক্ষা জাতীয় করণ হলে সরকারকে বাড়তি কোন খরচ বহন করতে হবে না। বরং আরো কিছু টাকা সরকারের বাড়তি লাভ হবে। যা দিয়ে আরো উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহন ও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

এবার আসা যাক সেই হিসাব নিকাশে।

দেশে মোট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রাথমিক বিদ্যালয় বাদে ৩৯,০৯২ টি। যার মধ্যে কলেজ ৪০০৭, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯,৮৪৭ টি, মাদ্রাসা ৯৩৪১ টি ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৫,৮৯৭ টি।

এছাড়া বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট শিক্ষক সংখ্যা ৫,০৬,৬৩৭ জন। যার মধ্যে কলেজ সমুহের শিক্ষক ১,১৭,৩৩৭ জন, মাধ্যমিকে ২,৪৩,৫৫০ জন, মাদ্রাসায় ১,১৩,৩৬৮ জন ও কারিগরিতে ৩২,৩৭৯ জন।

এবার একটু খেয়াল করবেন দেশে জাতীয়করণ বহির্ভূত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোট ১,৬২,৬৩,৭২৪ জন। যার মধ্যে কলেজ সমুহে পড়ে ৩৭,৬৭,৭৮৪ জন, মাধ্যমিকে ৯১,৬০,৩৬৫ জন, মাদ্রাসায় পড়ে ২৪,৬০,৩০৫ জন ও কারিগরিতে আছে ৮,৭৫,২৭০ জন শিক্ষার্থী।

READ MORE  শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কি খুলবে ২১ ফেব্রুয়ারির পরে?

এবার দেখা যাক সরকার প্রতিবছর মোট ৩৯,০৯২
টি বেসরকারি বা আধা সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহের ৫,০৬,৬৩৭ জন শিক্ষকদের বেতন ১,৪২৫ কোটি টাকা।

এসকল শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ বা পূর্ণ সরকারিকরণ করা হলে বেতন দিতে হবে মোট
৫,৮২০ কোটি টাকা। এটি গানিতিক হিসাবে অনেক গুণ জটিল মনে হলেও একটি সহজ হিসাব এই সংখ্যাকে সহজ করে দিতে পারে। নিম্নে সেই আলোচনায় আসছি।

আমাদের দেশের মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা পূর্বেই জেনেছি মোট ১,৬২,৬৩,৭২৪ জন। (যাদেরকে অধিকাংশকে নিয়মিত উপবৃত্তির টাকা ও প্রদান করা হয়) এদের কাছ থেকে মাত্র ১০ টি করে টাকা প্রতি মাসে নেওয়া হলে প্রতি বছর সরকারের আয় হবে ৫,৯০০ কোটি টাকা জাতীয় করণ করা হলে শিক্ষকদের বেতন দিতে হবে বছরে মোট ৫,৮২০ কোটি টাকা অথচ টাকা উঠে আসবে মোট ৫,৯০০। এখানে শিক্ষকদের বেতন দিয়েও সরকারের লাভ থাকবে ৮০ কোটি টাকা প্রতিবছরে।

এরফলে শিক্ষকদের শিখন শেখানো কার্যক্রমে আন্তরিকতা বাড়বে। যা থেকে সরাসরি শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মণ্ডলী লাভবান হবেন। শিক্ষাকে টেকসই ও কোয়ালিটিফুল করা সম্ভব হবে। তৈরি হবে দক্ষ উন্নয়ন মুখি আই এম জিপিএ ফাইভ বিহীন জনশক্তি। যাদেরকে দিয়ে আগামী দিনের বাংলাদেশকে আরো বেশি এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। মুক্তি পাবে দেশে হতাশাগ্রস্ত বেসরকারি শিক্ষকবৃন্দ। এছাড়া এটিই হতে পারে জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শিক্ষকদের জন্য মুজিব বর্ষের শ্রেষ্ঠতম উপহার।

-ডিবি আর আর।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কী ৩০ মার্চ খুলবে?

Leave a Comment