দৈনিক বিদ্যালয় ডেস্ক :: বৈশ্বিক মহামারির করোনা ভাইরাসের ঊর্ধমুখি গতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার জনসাধারণের চলাফেরা ও লোক সমাগমের ক্ষেত্রে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করতে যাচ্ছে বলে এর আগের রাতে ইঙ্গিত দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
২৮ মার্চ রবিবার রাতে তিনি বলেন, সোমবারই দেশের কিছু এলাকার জন্য এ ধরনের ঘোষণা আসতে পারে আগামীকাল (সোমবার) হয়ত বিভিন্ন টাইপের লকডাউনের ঘোষণা আসবে।
এরপর করোনার উর্ধমুখি সংক্রমণ ঠেকাতে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশসরকারের ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। আজ সোমবার (২৯ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত এক পত্রাদেশে এ নির্দেশ সমুহ প্রদান করা হয়।
ঘোষিত এই নির্দেশনা সমুহ আগামী দুই সপ্তাহ পর্যন্ত পালন করতে হবে সকলকে এবং এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দফতর ও সংস্থাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে পত্রাদেশে।
নিম্নে সেই নির্দেশনাগুলো তুলে ধরা হলোঃ
# সকল ধরনের জনসমাগম যথা সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, অন্যান্য সীমিত করতে হবে। এছাড়া উচ্চ সংক্রমণযুক্ত এলাকায় সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হলো। বিয়ে, জন্মদিন সহ যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে বলা হয়েছে পত্রাদেশে।
# মসজিদ সহ সকল ধরনের ধর্মীয় উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পালন নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
# গণপরিবহন সমুহে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং পরিবহন সমুহে ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশের বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।
# পর্যটন, বিনোদন কেন্দ্র সিনেমা হল, থিয়েটার হলে জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সকল ধরনের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে হবে।
# সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিময় এলাকাতয় আন্তঃজেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে এবং প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে।
# প্রবাসী যারা বিদেশ হতে আসবে, সে সকল যাত্রীদের ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন [নিজ খরচে হোটেল বাস] নিশ্চিত করতে হবে।
# নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী খোলা/উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনপূর্বক ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে; ওষুধের দোকানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।
# স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো মাস্ক পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।
# সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদরাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
# শপিং মলে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে।
# সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদরাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
# পত্রাদেশে বলা হয় অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা, আড্ডা বন্ধ করতে হবে এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ১০টার পর বাইরে বাহির হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
# প্রয়োজনে বাহির হতে হলে মাস্ক পরা সহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পালন করতে হবে। মাস্ক না পরলে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘণ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
# করোনায় আক্রান্ত রোগী বা করোনার লক্ষণযুক্ত ব্যক্তির আইসোলেশ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যান্যদের কেও কোয়ারেন্টাইন বাস করতে হবে।
# জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি ও বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান শিল্প কারখানাগুলো ৫০% জনবল দ্বারা পরিচালনা করতে হবে। গর্ভবতী, অসুস্থ, বয়স ৫৫ এর উপরে কর্মকর্তা, কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
# সকল ধরনের সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা যথাসম্ভব ভার্চুয়ালি আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে।
# সশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন ধরনের গণ পরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মান্য করতে হবে।
# প্রজ্ঞাপনে বলা হয় হোটেল, রেস্তোরাঁ সমুহে ধারণ ক্ষমতার ৫০% এর বেশি মানুষের প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।
# সব ধরনের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন সময়ে সর্বদা বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পালন নিশ্চিত করতে হবে।
-ডিবি আর আর।
