কর্মচারীদের সরকারীভাবে হাউজ লোন কার্যক্রম শুরু : যারা, যেভাবে পাবেন এই লোন

চাকুরীর বিধান

ডিবি ডেস্ক :: দেশের সকল সরকারি চাকরিজীবীদের হাউজ লোন সুবিধা দেওয়ার দাবি ছিল বহুদিনের। এবার সেই দাবি পূরণের পালা। সরকারি চাকরিজীবীরা মাত্র ৫ শতাংশ সরল সুদে ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত গৃহ নির্মাণ ঋণ পাবেন। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে এই প্রজ্ঞাপন হলেও এর বাস্তবায়ন এবার হতে চলেছে। এর জন্য কোন কোন ব্যাংক থেকে এই হাউজ লোন দেওয়া হবে, তা এবার নির্ধারণ করা হল।

সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহ নির্মাণ ঋণ দেবে ৫টি ব্যাংক। তালিকাভুক্ত করা সেই ব্যাংকগুলো হলোঃ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেড।

গত ২৫ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে এক নির্দেশনায় দেখা গেছে, গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা ২০১৮ অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ঋণ বিতরণে এই ব্যাংকগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

উক্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রশাসন ও সমন্বয় শাখার গৃহ নির্মাণ ঋণ কোষ থেকে জারিকৃত নির্দেশনায় বলা হয়ঃ

সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার
মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা, ২০১৮ এর অনুচ্ছেদ ৫ এর (গ) অনুযায়ী “সরকার অন্য যেকোন বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে নিয়ােগ করতে পারবে। এ প্রেক্ষিতে বাণিজ্যিক
প্রতিষ্ঠানের পরিধি বৃদ্ধি এবং ইসলামী আইন অনুযায়ী গৃহ নির্মাণ ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত ০৫ (পাঁচ)টি ব্যাংককে সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হলােঃ

১. ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড
২. পূবালী ব্যাংক লিমিটেড
৩. ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড
8. কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড
৫. স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেড।

এবার আসুন দেখে নেওয়া যাক, কী ছিল সেই প্রজ্ঞাপনেঃ

২০১৮ সালের জুলাই মাসে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য গৃহঋণ নীতিমালার প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল দেশের অর্থ মন্ত্রণালয়। সেই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবীরা মাত্র ৫% সরল সুদে ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত গৃহ নির্মাণ ঋণ পাবেন সকল গ্রেডের কর্মচারীরা। এক্ষেত্রে শর্তছিল, সরকারি চাকরিজীবীরা সর্বোচ্চ ৫৬ বছর বয়স পর্যন্ত এই ঋণের সুযোগ পাবেন এবং ব্যক্তি বয়স ৫৬ বছর পেরিয়ে গেলে আর এই ঋণ পাওয়ার সুযোগ থাকবে না।

READ MORE  রমজান মাসে সরকারি অফিসের সময়সুচি

সেই ২০১৮ তে জারি করা প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, সরকারি চাকরিজীবী ফ্ল্যাট কেনা বা নিজস্ব জমিতে বাড়ি নির্মাণের জন্য কেউ নিজস্ব উদ্যোগে ১০ টাকা খরচ করলে তিনি সর্বোচ্চ ৯০ টাকা ঋণ পাবেন। যার রেশিও হল ৯০ঃ১০।

এছাড়া সরকারি কর্মচারীদের গৃহ নির্মাণ ঋণের সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ১০%। সরল সুদ। এই সুদের উপর কোনও সুদ আদায় করা হবে না। এবং এই ঋণ পরিশোধের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় সর্বোচ্চ ২০ বছর। গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে লোন পাওয়ার এক বছর পর থেকে এবং ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে ঋণের টাকা পাওয়ার ছয় মাস পর থেকে মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ শুরু করতে হবে।

এছাড়া সরকারি চাকরিতে চুক্তিভিত্তিক, খণ্ডকালীন ও অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত কেউ এই ঋণ সুবিধা পাবেন না।

সেই নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, জাতীয় বেতন স্কেলের পঞ্চম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তা, যাদের বেতন স্কেল ৪৩ হাজার বা এরও বেশি তারা প্রত্যেকে ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরে গৃহ নির্মাণ ঋণ পাবেন ৭৫ লাখ টাকা।

জেলা সদরে চাকুরীজীবীদের ক্ষেত্রে এটি ৬০ লাখ এবং অন্যান্য এলাকায় ৫০ লাখ হবে।

বেতন স্কেলের ৯ম গ্রেড থেকে ৬ষ্ঠ গ্রেড পর্যন্ত বা যাদের মূল বেতন ২২ হাজার থেকে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত তারা ঢাকাসহ সকল সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদর এলাকার জন্য ৬৫ লাখ, জেলা সদরের জন্য ৫৫ লাখ ও অন্যান্য এলাকার জন্য ৪৫ লক্ষ টাকা ঋণ প্রাপ্ত হবেন।

১৩ তারিখে কী আসলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে?

১৫ তারিখের মধ্যে বিনা ব্যার্থতায় শিক্ষকদের যে তালিকা পাঠাতে বলেছে অধিদপ্তর

১১ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকা মূল বেতন বা দশম থেকে ১৩তম গ্রেডের চাকরিজীবীরা ঢাকাসহ সকল সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য ৫৫ লাখ টাকা, জেলা সদরের জন্য ৪০ লাখ ও অন্যান্য এলাকার জন্য ৩০ লাখ টাকা ঋণ প্রাপ্ত হবে।

READ MORE  শিক্ষা সহায়ক ভাতার সকল খুটিনাটি

এছাড়া ১৪তম গ্রেড থেকে ১৭তম গ্রেড বা বেতন স্কেলের ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার ২০০ টাকা বেতনধারীরা ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য ৪০ লাখ। যা জেলা সদরের জন্য ৩০ লাখ ও অন্যান্য এলাকার জন্য ২৫ লাখ টাকা ঋণ দেবে।

আর ১৮তম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেড বা যারা আট হাজার ২৫০ টাকা থেকে আট হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত মূল বেতন পান, এমন কর্মচারীরা ঢাকাসহ সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য গৃহ নির্মাণ ঋণ পাবেন মোট ৩৫ লক্ষ। যা জেলা সদরের জন্য হবে ২৫ লক্ষ ও অন্যান্য এলাকার জন্য তা হবে ২০ লক্ষ।

এই হাউজ লোন নীতিমালার ৪ ধারায় বলা হয়, উক্ত নীতিমালার আওতাধীন একজন সরকারি কর্মচারী দেশের যেকোনও এলাকায় গৃহ নির্মাণ বা ফ্ল্যাট কেনার উদ্দেশ্যে ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। তবে গৃহ নির্মাণ বা ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে ভবনের নকশা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। এছাড়া চাকুরীজীবী যে জমি বা ফ্ল্যাট কিনবে তা সম্পূর্ণ দায়মুক্ত হতে হবে।

ডিবি আর আর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *