এবার গাছের ডালে উঠে পরীক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয়

নিজস্ব সংবাদদাতা :: আটকে যাওয়া অনার্স ৪র্থ বর্ষের ভাইভা পরীক্ষা অনলাইনে নেওয়ার ধারাবাহিকতায় বগুড়ায় বৃষ্টির মধ্যে গাছে উঠে এক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এভাবে গাছে উঠে ছাতা মাথায় জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে অনলাইন ভাইভা পরীক্ষায় অংশ নেন ঐ শিক্ষার্থী। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

গতকাল (২১জুন) বিষয়টি যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেছেন সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ ড. বেলাল হোসেন।

তিনি তার স্ট্যাটাসে লিখেন, “গতকাল বগুড়া সরকারি শাহসুলতান কলেজে (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে) চতুর্থ বর্ষ অনার্স বাংলা বিষয়ের মৌখিক পরীক্ষা নিচ্ছিলাম জুম প্লাটফর্মে পরীক্ষা চলাকালীন সময় হঠাৎ লক্ষ করি এক শিক্ষার্থী গাছে চড়ে ভাইভা দিচ্ছে! বোর্ডের সকলের দৃষ্টি তখন তার দিকে। বোর্ডের অন্য সদস্যদের মতো আমিও তখন শঙ্কিত! শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি গাছে ওঠেছো কেন? সে বললো, “স্যার আমার গ্রামে ঠিকমতো নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না! পরীক্ষা যদি মিছ যায়! তাই বাধ্য হয়ে গাছে চড়েছি!” সকালে বেশ বৃষ্টি হয়েছে। গাছ ভেজা ছিল। যে কোনো সময় একটি দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো! সবাই মিলে দ্রুত ওকে গাছ থেকে নামালাম। ওর কথা যে মিথ্যে নয় আরও কয়েকজনের ভাইভা নিতে গিয়ে তার প্রমাণ পাওয়া গেল। কেউ বাড়ির বাইরে খড়ের গাদায়, কেউ মাচাংয়ে বা ফাঁকা মাঠে, কেউ বা বাঁশ ঝাড় ও উঁচু ঢিবির ওপর দাঁড়িয়ে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণের চেষ্টা করেছে। ওদের কথা আমরা শুনি তো ওরা আমাদের কথা শুনতে পায় না! যেটুকু পাওয়া যায় সেটাও ভাওয়াইয়া গানের সুরের মতো ভাঙা ভাঙা!

আমাদের গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক ও গতি কেমন আমরা সবাই জানি। আমরা ৫জির স্বপ্ন দেখছি কিন্তু ৪জির সেবাই ঠিক মতো দিতে পারি নি! আমাদের ৬০/৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী এখনও খুব কষ্ট করে পড়ালেখা করে। কেউ পার্টটাইম চাকরি করে, কেউ টিউশনি, কেউ বা গার্মেন্টসে শ্রম দেয়! অনার্সে ভর্তি হয় শত শত শিক্ষার্থী। কিন্তু ক্লাসে আসে হাতে গোনা কয়েকজন! এদের আমরা না দিতে পারছি ঠিকমতো পাঠ, না পারছি জীবনের শিক্ষা দিতে! আর দক্ষ মানবসম্পদ সে এক অধরা স্বপ্ন! আমাদের শিক্ষার্থী আমাদের শিখিয়ে গেল, গাছে শুধু সে একা ওঠেনি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাও উঠেছে!”

READ MORE  একজন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার

বিষয়টি অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের ইন্টারনেট এবং অনলাইনে পরীক্ষার সক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

-ডিবি এবিএস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *