আমরা নারী, আমরা পারি : সন্তান কোলে নিয়েই ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষিকা মা

প্রাথমিক

বিদ্যালয় রিপোর্ট :: নাম ডানা ত্রিপুরা। উনি বান্দরবানের আলীকদমের পানবাজার এলাকার চম্পট পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি নিজের সাত মাসের শিশুকে নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যাচ্ছেন, ক্লাস নিচ্ছেন। বিষয়টি নেটিজেনদের কাছে প্রশংসনীয় হয়েছে।

আরও খবরঃ প্রাথমিক শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতার তালিকা প্রকাশ : আপত্তি জানাতে হবে যেভাবে

এবার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ২ দিন ক্লাস

শিক্ষকদের অনলাইন বদলী ও প্রাথমিকের সমাপনী পরীক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত

শিক্ষিকা ডানা ত্রিপুরা জানান, তা দুই কন্যাই এখনো শিশু বয়সের। বড়টা আড়াই বছরের আর ছোটটা সাত মাসের। সে ছাড়া ওদের দেখে রাখার মতো কেউ নেই। তিনি অনেক চেষ্টা করেছেন, কিন্তু বাচ্চাকে দেখে রাখার মতো কাউকে পাইনি। আর যেহেতু ছোটটার বয়স ছয় মাস পেরিয়ে গেছে তাই মাতৃত্বকালীন ছুটির সময় শেষ।

তিনি জানান, “আমরা তো এমনিতেই বাচ্চা কোলে নিয়ে সংসারের বিভিন্ন কাজ করি, স্কুলের কাজও তো এভাবেই করা যায়। তাই আমার কাছে স্কুলে বাচ্চা নিয়ে যাওয়াটা বেটার মনে হয়েছে। এতে করে আমার শিশুও সুরক্ষিত থাকল আর আমার পেশাগত দায়িত্ব ও পালন করা হলো। আর আমার ডিউটি যেহেতু সকাল ৯টা থেকে বিকেল সোয়া ৪টা, সেহেতু এই দীর্ঘ সময় বাচ্চাকে অন্য কারো কাছে রেখে আসলেও দেখা যায়, আমার মন ওর কাছে পড়ে থাকে। পড়ানোটা তখন ফলপ্রসূ হয় না।”

ডানা আরও জানান, তার পরিবার চার সদস্যের। স্বামী-স্ত্রী আর দুই সন্তান। তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন জুমচাষ করেন। তারা চাইলেও তাদের সাথে থাকতে পারেন না। আবার তার মা ও কর্মজীবী। তার স্বামী ব্যবসায়িক কাজে ব্যস্ত থাকেন। বাসায় সব সময় সময় দিতে পারেন না। তারপরও যেদিন তার স্বামী থাকেন সময় দেন। তবে সে দুজনকে একত্রে সময় দিতে বা সামলাতে পারেন না। তাই বাধ্য হয়েই তাকে স্কুলে বাচ্চা নিয়ে যেতে হয়।

READ MORE  প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

ডানার ভাষায়, “আর আমার সহকর্মীরা খুবই সহযোগী মনোভাবসম্পন্ন। যদিও চাকরিবিধি অনুযায়ী বাচ্চা নেয়া নিষেধ, তারপরও মানবিকতার দিক থেকে তারা আমাকে সম্মতি দেন।”

তার যখন ক্লাস থাকে, সন্তান ঘুমিয়ে থাকলে তখন যে শিক্ষকের ক্লাস অফ থাকে, তিনি তার সন্তানটির খেয়াল রাখেন।

তার ভাষায়, “তবে একটা বিষয় আমি সব সময়ই চেষ্টা করি, তা হলো আমার বাচ্চার করণে, ক্লাসের বা স্কুলের পরিবেশের যেন ক্ষতি না হয় তা খেয়াল রাখা, আমি মনে করি এই জায়গাটাতে আমি সাকসেস।”

তিনি জানান, তার পক্ষে এভাবে ক্লাস নেয়া সম্ভব হয়েছে তার প্রধান শিক্ষক এবং সহকর্মীদের কারণে।

এবিষয়ে উদ্যোক্তাদের জনপ্রিয় উই গ্রুপে শিরিন সুলতানা লিখেছেন, ‘আমরা নারী, আমরা পারি। নারীরা যে সব পারে তার এক জ্বলন্ত উদাহরণ আমাদের ডানা পঞ্জি চম্পা বা ডানা ত্রিপুরা। যিনি তার বাচ্চাকে কোলে নিয়ে তার দায়িত্ববোধ থেকে তার স্কুলের ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছেন। -ডিবি আর আর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *