শিক্ষাগুরুর মর্যাদা কতদুর?

মতামত

দৈনিক বিদ্যালয় :: একটা দেশকে এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষার কোনও বিকল্প নেই। আর মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে
প্রয়ােজন শিক্ষকের জীবনমানের উন্নয়ন। এর অর্থ এই নয় যে, তাদের বেতন বাড়িয়ে দেয়া। শিক্ষকরা যাতে তাদের পরিবার নিয়ে মােটামুটি স্বচ্ছলভাবে চলতে পারেন, তার জন্য যৌক্তিক বেতন অবশ্যই প্রয়ােজন।

আরও খবরঃ প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলী শুরু সফটওয়্যারের কাজ শেষে

বিদ্যালয় খুললেও অনলাইন ক্লাসের বিশেষ নির্দেশনা প্রাথমিক অধিদপ্তরের

অনলাইনে ক্লাস করা ২১ হাজার শিক্ষক ভাতা পাচ্ছেন

পাশাপাশি তাদের উপযুক্ত সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকদেরকে যখন আদমশুমারি থেকে শুরু করে স্কুলে বাথরুম
পরিষ্কার করতে হয়–তখন তাদের মান-মর্যাদা তলানিতে গিয়ে ঠেকে। এসব কাজ যে অসম্মানের–এ কথা আমার নয়, আমাদের সমাজব্যবস্থাই তা নির্ধারণ করে দিয়েছে; অন্তত শিক্ষকদের বেলায় তাে অবশ্যই! ‘শিক্ষকতা মহান পেশা’ এই বুলি আওড়ে যদি তাদেরকে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারির মর্যাদা দেয়া হয়, তখন সেটা হয়ে ওঠে দুঃখের, আক্ষেপের আর হতাশার।

শিক্ষকরা এতদিন তাদের অবস্থান শুধু অনুভব করে গেছেন; বুকে আশা নিয়ে বসেছিলেন, হয়তাে একদিন এই অবস্থার পরিবর্তন হবে। এমন সময় সরকারের কোনও কর্তাব্যক্তি যদি বলেন: ‘শিক্ষকরা ঘটনাচক্রে শিক্ষক। অন্য পেশায় যেতে না পেরে তারা শিক্ষক হয়েছেন।’–তাহলে তাদের কপালে চিন্তার ভাজ, চোখেমুখে উৎকণ্ঠার ছাপ পড়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এই কথার মাধ্যমে মােটামুটি রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘােষণা দেয়া হয়ে যায় যে, দেশে শিক্ষকদের জীবনমান অন্য যেকোনও পেশার তুলনায় নিম্নে অবস্থান করছে; ‘বেটার অপরচুনিটি’ পাওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে শিক্ষকতা পেশা গ্রহণ করেছেন। যদি কর্তাব্যক্তিরা শিক্ষকতাকে অন্য পেশার চাইতে উঁচু মনে করতেন, তাহলে এধরনের মন্তব্যের অবকাশ থাকত না। রাষ্ট্র বিশাল একটি পরিবার। সেই পরিবারে শিক্ষকরা গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। শিক্ষকদের ন্যূনতম সম্মান আর জীবনমানের উন্নয়নে রাষ্ট্রকে কি খুব বেশি বেগ পেতে হবে?

READ MORE  সংশোধিত জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮: যত অসংগতি ও বৈষম্য

কিছুদিন আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে উচ্চবিদ্যালয়ের পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও সপ্তাহে দুইদিন ছুটির ব্যবস্থা করা হয়েছে; যা ২০২৩ সাল থেকে চালু হওয়ার কথা। শিক্ষকদের উচিত তাদের সুখ-দুঃখ, হতাশা আর আক্ষেপগুলাে মাননীয়
প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি উত্থাপন করা; আমি নিশ্চিত, তিনি খালি হাতে ফেরত দেবেন না। সেই ব্যবস্থা কি করা যায় না?

-মিনহাজ মঞ্জুর, সহকারী শিক্ষক, গোটাটিকর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুরমা, সিলেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *