সামঞ্জস্যের অপূর্ণতায় পরিপূর্ণ প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা

প্রাথমিক

বিশেষ প্রতিবেদন :: কোন কিছু যখন সকল দিক দিয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তখন সেখানে প্রস্ফুটিত হয় সৌন্দর্য, উদ্দেশ্য হয় সফল, আসে প্রত্যাশিত সফলতা। সেটা জীবন, প্রকৃতি, সাহিত্য, সঙ্গীত, শিক্ষা সহ সকল ক্ষেত্রেই সমভাবে প্রযোজ্য।

এ কথাটি চিন্তাশীল মানুষ মাত্রই অনুধাবন যোগ্য। অথচ বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার নীতিনির্ধারক ও পরিচালক চিন্তাশীল ব্যক্তিরা কি এই সামঞ্জস্যের সামঞ্জস্য বিধানে সত্যিই আন্তরিক?

হাজারো অসামঞ্জস্যতা যখন শিক্ষক, শিক্ষার্থী আর শিক্ষার বারোটা বাজিয়ে ছাড়ছে, যে গুলো প্রতিনিয়ত নানা মাধ্যমে লিখনীর দ্বারা চখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। নির্দিষ্ট সমস্যাগুলো যখন শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, যেখানে সমাধানের সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট পথ রয়েছে সেখানে কতৃপক্ষ সেই সুস্পষ্ট পথগুলোকে কেন যেন অনাগত অনির্দিষ্টের মাঝে  বিলিয়ে দিয়ে সমস্যা গুলো জিইয়ে রাখছেন। কিন্তু কেন?

প্রাথমিক শিক্ষা সকল শিক্ষার ভীত। যার অর্থ দাঁড়ায়, যে কতৃপক্ষ আজ নীতিনির্ধারণ করছেন, পরিচালনা করছেন, তাঁরাও শিক্ষা জীবনে প্রথমে এ স্তর পাড়ি দিয়েই ক্রমান্বয়ে আজকের এ স্হানে আসীন হয়েছেন। অথচ লঙ্কায় গিয়ে তারা আজ নিজেদের ভীতের অস্তিত্ব কে প্রায় অস্বীকার করতে চলেছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভিত্তি কে নড়বড়ে করার নীতি নির্ধারণে রয়েছেন অনড়। প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকদের সমস্যাগুলোকে দিনের পর দিন উপেক্ষা করা হচ্ছে। শিক্ষকদের চাওয়া পাওয়া আর প্রয়োজনগুলোকে এমন ভাবে উপেক্ষা করা হচ্ছে যেন তারা মানুষ-ই নয়। উপরন্ত তাদের প্রতি হাজারো প্রজ্ঞাপন আর নিয়ম নীতির রোলার চালানো হচ্ছে যেন তা জগদ্দল পাথরের মতো শিক্ষক আর শিক্ষা ব্যবস্থার সুন্দর বিকাশের মুল পথ রুদ্ধ করে বসে আছে। কতৃপক্ষ তার অধীনস্থকে যেন প্রতিপক্ষ বানিয়ে নিয়েছে, যা বিগত অনেক কর্মকাণ্ড সুস্পষ্ট ভাবেই প্রমাণ করেছে।

কোন ক্লাসে শিক্ষার্থীর বয়স কত হতে হবে : ১ম-১০ম শ্রেণি

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাস কমানো ও স্কুল বন্ধ করা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর আজকের বক্তব্য

READ MORE  ১০ দফা দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি ঘোষণা

ফেব্রুয়ারি-মার্চে আবার বন্ধ হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান!

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যে নতুন সুখবর

আমরা প্রায় ৪ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষক এমন পরিবেশ চাই না। চাইনা এমন অনাকাঙ্ক্ষিত, বৈষম্যমুলক আচরণ। আমরা চাই, প্রাথমিক শিক্ষকদের সকল নায্য পাওনাগুলো, দাবীগুলো পরিপূর্ণ করে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা সামঞ্জস্যের আলোয় সাজানো হোক, যেখানে শিক্ষকরা হৃদয়ের সবটুকু আবেগ দিয়ে, দরদ দিয়ে, ভালবাসা দিয়ে পাঠদান করবে। আর শিশুরাও সামঞ্জস্যপূর্ণ সময়ে মন খুলে, প্রাণের স্পন্দনে, হাসি খেলার ছলে লাভ করবে কাঙ্খিত শিক্ষা। গোটা জাতি দাঁড়াবে শক্ত মজবুত প্রাথমিক শিক্ষার ভীতের ওপর। আসুন সকল শিক্ষক এক কন্ঠে এমন প্রাপ্তির শপথে মুখরিত করি আকাশ, বাতাস সহ গোটা দেশ যেন কতৃপক্ষের কর্ণকুহরে তা প্রবেশ করে জোরে সোরেই, যা এতদিন আমরা শোনাতে পারিনি। মরার আগে আর মরা নয়, একটি অঙ্গুলি হেলনে যেন আমরা সবাই হেলতে পারি, দুলতে পারি নিজেদের নায্য অধিকার আদায়ে।

-এম ওয়াদুদ ফাররোখ, (ডবল এম এ, সি ইন এড,বি এড), সহকারী শিক্ষক, জিয়াপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ক্ষেতলাল, জয়পুরহাট ও সভাপতি, বাংলাদেশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, ক্ষেতলাল উপজেলা শাখা, জয়পুরহাট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *