নতুন বিপদে শিক্ষক সহ ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারিরা

চাকুরীর বিধান

নিউজ ডেস্ক :: দেশের সরকারি কর্মচারিদের মধ্যে যারা ১১-২০ গ্রেড কর্মরত আছেন, তারা খুবই শোচনীয় অবস্থার মধ্যে পড়ে গেছে। প্রত্যেক বছর মূল্যস্ফিতির হার গড়ে প্রায় ৬ শতাংশ। অথচ সরকারি কর্মচারিদের বেতন বৃদ্ধি পায় মাত্র ৫ শতাংশ হারে। যা ফলে প্রতিবছর প্রায় ১ শতাংশ বেতন ঘাটতি থাকায় গত ৬ বছরে ৬ শতাংশ নেতিবাচকে বা পিছনে এ চলে গেছে দেশের নিম্ন শ্রেণির কর্মচারিদের বেতন ও ভাতা।

কাঁচের মত স্বচ্ছ মোবাইল ফোন বাজারে আনতে যাচ্ছে বিশ্বখ্যাত এই ব্রান্ড কোম্পানি

মহাপরিচালকের আবেগ, বিবেক না আইনে নিয়ন্ত্রিত প্রাথমিক শিক্ষকদের ভাগ্য?

যেভাবে ১০ম গ্রেডসহ গেজেটেড কর্মকর্তা হল প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকবৃন্দ

বারবার এই ঘাটতি পুরণ ও বেতন বৃদ্ধির দাবি করেও অসহায় কর্মচারীদের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও বাড়িভাড়া মূল্যের সাথে বেতন ভাতা দিন-দিন অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাজারের উর্ধগতির সাথে কোনভাবে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারিদের বেতন ভাতার ধীর গাড়ি চলে পারছে না। এছাড়া সন্তান ও পরিবারের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে অক্ষম হয়ে পড়ছে এ শ্রেণির  কর্মচারিরা।

ভুক্তভোগীরা বলছে, যদি পদোন্নতি বৈষম্য, টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড বহাল, একই অফিসে কর্মরত উর্ধতনের সাথে গ্রেড ব্যবধান কমানো হত, তাহলে কর্মচারিদের মৌলিক চাহিদাগুলো মিটত ও ঋণের বোঝা মাথায় নিতে হতো না তাদের।

১১-২০ গ্রেডে চাকরিকরা নিম্ন শ্রেণির কর্মচারিগণ যে পরিমাণ বেতন পান তাতে সংসার চালাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে, প্রয়োজন মেটাতে নিয়মিত তাদের ঋণের দারস্থ হতে হচ্ছে।

তারা বলছে জাতীয় পে-স্কেলের সংস্কারের জন্য ২০১৭ সালে কমিটি গঠন করা হলেও তা পরবর্তীতে আর আলোর মূখ দেখেনি। জাতীয় বেতন স্কেল সংস্কার করে গ্রেড কমিয়ে ১০টি গ্রেডে আনয়ন করা হলে, গ্রেড ব্যবধানে সমতা আনয়ন করা হয়ত পেরে উঠতে পারত এই অসংলগ্ন অবস্থা থেকে।

মূলত তাদের নিম্নোক্ত দাবিগুলো পূরণ হলে, ব্যাংক বা এনজিওগুলোর দারস্থ হয়ে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাত পার করতে হতো না। যে দাবিগুলো হল এমনঃ

READ MORE  সরকারী কর্মচারীদের LPR ও PRL কী? কোনটি বর্তমানে চালু আছে?

১#  জাতীয় স্থায়ী বেতন কমিশন গঠন পূর্বক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ১৯৭৩ সনের ১০ ধাপে ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। এছাড়া সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের পার্থক্য ১:৫ হতে হবে এবং পূর্বের ন্যায় শতভাগ পেনশন প্রথা পূনঃবহাল করতে হবে।

২# দেশে এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি চালুসহ সচিবালয়ের ন্যায় সচিবালয়ের বাহিরের সরকারি কর্মচারিদের পদ ও বেতন বৈষম্য দূর করতে হবে এবং দেশের প্রাথমিক শিক্ষকদের মত ব্লক পোস্টধারীদের পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

৩# আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিল করে উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে দ্রুত হস্থান্তর করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন দপ্তর/প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন খাতে কর্মরত কর্মচারিদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। ডাক বিভাগের প্রার্থী প্রথা চালুসহ মাস্টার রোল ও অন্যান্য দপ্তররে কর্মরত মাস্টার রোল, কন্টিজেন্স ও ওয়ার্কচার্জ কর্মচারিদের রাজস্ব খাতে দ্রুত স্থানান্তর করতে হবে।

৪# সরকারি কর্মচারিদের আগের মত আবার ৩টি টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড ও বেতন সমতাকরণ পূনঃবহাল করতে হবে। এছাড়া জীবন যাত্রার মান সমুন্নত রাখার স্বার্থে টাকা মান অবমূল্যায়নের কারণে এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয় বিবেচনা করে পেনশনের হার ৯০% থেকে ১০০% ও গ্রাইচ্যুইটির হার ১ টাকায় ২৩০ টাকার স্থলে ৪০০ টাকায় উন্নীত করার দাবি তাদের।

৫# ৯ম পে-স্কেল প্রদানের আগ পর্যন্ত দ্রব্য মূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির বিষয় বিবেচনা করে ৫০% মহার্ঘ ভাতা প্রদান করতে হবে।

৬# প্রশাসন ক্যাডারে কর্মরত কর্মচারিদের ন্যায় ১১-২০তম গ্রেডের সরকারি কর্মচারিদের বিনা সুদে ৩০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ দিতে হবে ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারিদের নিয়োগের দিন থেকে সিনিয়রিটি পাওয়ার জন্য করা রিট মামলার মহামান্য হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত আদেশ দ্রুত বাতিল করার দাবি তাদের।

৭# সরকারি চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর এবং অবসরে যাওয়ার বয়সসীমা ৬২ বছর করতে হবে। দেশের প্রাথমিক শিক্ষার শিক্ষকদের ন্যায় অন্যান্য সকল দপ্তরে পোষ্য কোটা চালু করা।

READ MORE  শিক্ষা সহায়ক ভাতার সকল খুটিনাটি

নিম্ন গ্রেডে চাকরি করা এসকল কর্মচারী বলছেন, উপরোক্ত দাবিগুলো সরকারের নিকট বারবার উপস্থাপন করা হচ্ছে এবং সংসদে এ বিষয়ে আলোচনা হলেও সরকার সে বিষয়ে কোন বক্তব্যই পরিস্কার করছে না। তারা বলছে, জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ বাস্তবায়নের ৬ বছর পূর্ণ হয়ে গেলেও নতুন পে-স্কেল বা ৯ম-পে স্কেলের কোন ঘোষণার নতুন কোন লক্ষণই নেই।
এ অবস্থার দ্রুত ইতিবাচক পরিবর্তন না আসলে সরকারি এসব কর্মচারীদের হয়ত অফিস সময়ের পরে অন্যের বাড়িতে কামলা দিতে হবে! তা ছাড়া বিকল্প দেখছে না ভুক্তভোগীরা!!

উল্লেখ্য, দেশের প্রাথমিক শিক্ষকবৃন্দ সমযোগ্যতায় সব চেয়ে বেশি বেতন বৈষম্যের শিকার। দেশের সর্ববৃহৎ এ শ্রেনির নিম্ন গ্রেডে চাকরি ক্রা কর্মচারীরা সন্মান ও বেতনের দিক দিয়ে জাতির জন্য লজ্জার।

ডিবি আর আর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *