প্রবাসে এনআইডি সেবা: আরব আমিরাতে যে স্থানে শুরু হচ্ছে বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ

আরব আমিরাত

প্রবাসে বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির আবেদন নেওয়ার সাড়ে তিন বছরের মাথায় এনআইডি সেবা পেতে যাচ্ছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসীরা।

এই লক্ষ্যে দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে নির্বাচন কমিশনের একটি কারিগরি দল সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাচ্ছে বৃহস্পতিবার।

দূতাবাসের মাধ্যমে এনআইডি দেওয়ার কাজ তদারকিতে এক সপ্তাহ পর যাচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনসুলার ও ওয়েলফেয়ার উইংয়ের মহাপরিচালকসহ একটি প্রশাসনিক টিম।

যন্ত্রপাতি বসিয়ে প্রশিক্ষণপর্ব শেষ হলেই দূতাবাসে ভোটারযোগ্য নাগরিকদের তথ্যসংগ্রহ ও বায়োমেট্রিক তথ্য নিবন্ধনের কাজ শুরু হবে।

কে এম নূরুল হুদা কমিশন ২০১৯ সালের নভেম্বরে অনলাইন নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু এরপর মহামারীতে সেই উদ্যোগ থমকে যায়।

কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন আবার সেই কাজে গতি আনার উদ্যোগ নিচ্ছে।

মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও মালদ্বীপ প্রবাসী পাঁচ হাজারের বেশি বাংলাদেশির এ পর্যন্ত এনআইডির জন্য আবেদন করেছেন।

নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি উইং) নিবন্ধন ও প্রবাসী শাখার পরিচালক মো. আব্দুল মমিন সরকার বুধবার জানান, ইসির কারিগরি টিম সেখানে গিয়ে নাগরিকের ছবি তোলা, দশ আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া, আইরিশের প্রতিচ্ছবি সংগ্রহের মত বায়োমেট্রিক তথ্য নেওয়ার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবেন।

ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমিরাতে পাঠানো হয়েছে; সেগুলো কাজের জন্য প্রস্তুত করার পাশাপাশি নাগরিকদের আবেদনের তথ্য ডেটাবেইজে ‘আপলোড’ করার বিষয়টি হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দেবেন তারা।

“কারগির টিম ৩১ মে পর্যন্ত অবস্থান করার কথা রয়েছে। অনলাইন ও অফ লাইনে আবেদন করার সুযোগ থাকবে। দূতাবাসে যাতে এনআইডি সেবার কাজটি সুচারুভাবে করা যায়, সে বিষয়টি এ কারিগরি টিম নিশ্চিত করবে। সেখানে একটি প্রশিক্ষিত লোকবলও তৈরি হবে, এর মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের হাতে দ্রুত এনআইডি পৌঁছে দেওয়া যাবে।”

আব্দুল মমিন সরকার জানান, প্রশাসনিক টিম এবারের পাইলটিংয়ের পুরো কাজ দেখে আসবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে সফলভাবে করা গেলে একই সেবা আরও ৪০টি দেশে পর্যায়ক্রমে চালুর পথ সুগম হবে।

READ MORE  বাড়ছে বিদেশ থেকে লাগেজে স্বর্ণ আনার খরচ

এ কর্মকর্তা জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিরা অনলাইন ও অফলাইনে আবেদনের পর স্থানীয়ভাবে তা যাচাই বাছাই করা হবে। তদন্তে সব কিছু সঠিক থাকলে তাদেরকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। এরপর দেশে এনআইডি বা স্মার্টকার্ড প্রিন্ট করে বিশেষভাবে দূতাবাসে পাঠানোর পর সেখান থেকেই নাগরিকরা তা সংগ্রহ করবেন।

>> ২০১৯ সালের নভেম্বরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

>> এ পর্যন্ত ছয়টি দেশ থেকে অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন পাঁচ সহস্রাধিক নাগরিক।

>> ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মালয়েশিয়ার ৪৮৭ জন, সৌদি আরবের ১৬২১ জন, সিঙ্গাপুরের ৩৯১ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ১৩৭৫ জন, যুক্তরাজ্যের ১২১৬ জন ও মালদ্বীপের ৪৮ জনের আবেদন করেছেন। এসব আবেদন যাচাই-বাছাই ও তদন্তের কাজ চলমান রয়েছে।

সবশেষ গেল মার্চে কমিশন সভায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের এনআইডি দেওয়ার বিষয় আলোচনা হয়।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সে সময় জানান, ইসির দক্ষ লোকবল পাঠিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এনআইডি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও সেবা দেওয়া হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *