কাশিমপুর কারাগার থেকে পালাতক আসামির বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগরে

দৈনিক বিদ্যালয় | ২০২০

কাশিমপুর কারাগার থেকে পালানো আসামির বাড়ি সাতক্ষীরার জেলার শ্যামনগর উপজেলার ‘আবাদ চন্ডীপুর’ গ্রামে। বিষয়টি নিয়ে সারা দেশের মত আসামি আবু বকর সিদ্দিকের নিজ এলাকা শ্যামনগরে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

গাজীপুর জেলার কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার -২ থেকে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক কয়েদী পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় প্রধান কারারক্ষীসহ ১২ জন কারা রক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে শুক্রবার বিকেলে গাজীপুর মেট্রো পলিটন পুলিশের কোনাবাড়ি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার -২ এর সিনিয়র সুপার জাহানারা বেগম এ বিষয়ে জানান, আসামির বাড়ি সাতক্ষীরার জেলার শ্যামনগর উপজেলার আবাদ চন্ডীপুর গ্রামে। তার পিতার নাম তেছের আলী গাইন। আসামির নাম আবু বকর সিদ্দিক। বয়স ৩৪। বিগত ২০১১ সালের ১৪ জুন হতে সে এই কারাগারেই বন্দি ছিলেন।

শ্যামনগর থানার একটি হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী হিসেবে তাকে রাজশাহীর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কাশিমপুরের এ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

২০০২ সালের ১৭ মার্চ এর একটি হত্যা মামলায় বিজ্ঞ আদালত তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু আদেশ দেন ২০০৬ সালের ৬ আগস্ট। পরে আসামীর আপিলের প্রেক্ষিতে আদালত ২০১২ সালের ২৭ জুলাই সাজা সংশোধন পূর্বক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লক আপের সময় বন্দি গণনাকালে আবু বকরকে পাওয়া যায় নি। এরপর হতে সে নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় কারাগারের পক্ষ থেকে বিকেলে জিএমপি’র কোনাবাড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাশিমপুর কারাগার সূত্রে জানাগেছে, এর আগেও এই কয়েদি আবুবকর কারাগার থেকে নাকি পালানোর চেষ্টা করে ছিলেন। সে ২০১৫ সালের ১৩ মে সন্ধ্যায় কারাগারের সেল এলাকার একটি সেফটি ট্যাংকে লুকিয়ে ছিল। দীর্ঘ সময় খোঁজাখুঁজির পর কারগারের ৪০ নং সেল এলাকার ওই সেফটি ট্যাংকির ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাকে কারাগারে কিছুদিন বেড়ি পরিয়ে রাখা হতো। এতে আবু বকর কিছুটা মানসিক বিকার গ্রস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে শিকল মুক্ত করা হয়। সে কারাগার চত্বরে অন্য বন্দিদের সঙ্গে কাজ-কর্ম করতেন। তবে মানবিক কারণে তাকে কাজের জন্য খুব বেশি চাপ দেয়া হতো না। পালানোর দিন বৃহস্পতিবারও কারাগারের ভিতরে অন্যদের সঙ্গে মুক্ত ছিলেন আবুবকর। সন্ধ্যায় লক আপের সময় বন্দিদের গণনাকালে তাকে আর পাওয়া যায়নি। পরে কারাগারের ভিতরের ৬টি ভবনের ২৪ টি কক্ষে তার খোঁজ না পেয়ে সকল বন্দিদের রোল কল করে আবু বকরের নিখোঁজ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয় কারা কর্তৃপক্ষ। এখনো পর্যন্ত তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।

কাশিমপুর কারার একটি সূত্র থেকে জানা যায়, কারাগারের দেয়ালে থাকা আগাছা পরিষ্কার করা এবং রং করার কাজে ব্যবহৃত মই দিয়ে গত বৃহস্পতিবার যে কোন সময় পালিয়ে যেতে পারেন আবু বকর।

এ বিষয়ে কোনাবাড়ি থানার ওসি এমদাদ হোসেন জানান, ‘এ ঘটনায় কারাগারের জেলার বাহারুল ইসলাম বাদী হয়ে বিকেলে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পলাতক আবু বকরের সন্ধানে পুলিশ কাজ করছে।’

কারাগার সুপার জাহানারা বেগম বলেন, কারাগার থেকে কয়েদি নিখোঁজ হওয়ার এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে প্রধান কারারক্ষীসহ মোট ১২ জন কারা রক্ষীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হচ্ছে।
 
(ডি বি আর আর)

আরো খবর পড়ুন মুকেশ আম্বানি বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ ধনী

Leave a Comment