পাসপোর্টে যে ভয়াবহ দুর্নীতি

ই-পাসপোর্ট চালুর পরও পুরোনো এমআরপি (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট) নবায়ন করার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস থেকে গণহারে এমআরপি নবায়ন করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত শুরু হলে দুর্নীতিবাজ চক্র বাধার দেওয়াল তোলে। এমনকি অপকর্ম ঢাকতে ঘুস বাণিজ্যের সাক্ষীদেরও অপহরণ করা হয়।

খোদ পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) নিজস্ব তদন্তে অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির এমন ভয়াবহ চিত্র উঠে আসে। অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক উম্মে সালমা তানজিয়ার নেতৃত্বাধীন কমিটি ৩০ আগস্ট দীর্ঘ ৬২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে এক পরিচালকসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ঘুস সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মেলে।

নথি তলব : তদন্তের শুরুতে এমআরপিসংক্রান্ত ৬ মাসের তথ্য তলব করে তদন্ত কমিটি। ২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগীয় অফিসে গ্রহণকৃত এমআরপি আবেদনের কপি ঢাকায় পাঠাতে বলা হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে বিপুলসংখ্যক আবেদন গোপন করা হয়। এ সময়কালে ৪ হাজার ৬২৪টি এমআরপি নবায়ন করা হলেও পাঠানো হয় মাত্র আড়াই হাজার আবেদন। পরে দৈবচয়ন ভিত্তিতে বেশ কয়েকজনকে ফোন করা হয়। এ সময় তারা মোটা অঙ্কের ঘুস দিয়ে পুরোনো এমআরপি নবায়নের কথা স্বীকার করেন।

সাক্ষী অপহরণ : ঘুস বাণিজ্যের শিকার এসব ভুক্তভোগীর বক্তব্য রেকর্ডের জন্য তদন্ত কমিটির সদস্যরা ৮ ফেব্রুয়ারি সরেজমিন চট্টগ্রাম উপস্থিত হন। সাক্ষীদের কয়েকজনকে ৯ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় পাসপোর্ট কার্যালয়ে আসতে বলা হয়। কিন্তু মাঝপথে বিপত্তি বাধে। সাক্ষীদের কয়েকজন নির্ধারিত দিনে চট্টগ্রাম অফিসে উপস্থিত হলেও তাদের বাধা দেওয়া হয়। এমনকি ২-৩ জন সাক্ষীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।