প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার জন্য ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত

দৈনিক বিদ্যালয় ডেস্ক :: প্রেমিককে বিয়ে করতে বাধা দেওয়ায় এক রাতেই পরিবারের সাত সদস্যকে খুন করেছিলেন এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। এখান থেকে ১৩ বছর আগে ভারতে উত্তরপ্রদেশে এ ঘটনা ঘটে। যা নিয়ে সমগ্র ভারতজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।

সেই ঘটনার জন্য ২০১০ সালে দোষী সাব্যস্ত হন শবনম আলি নামক এক প্রাথমিক শিক্ষিকা। ভারতের আদালত তাকে ফাঁসির রায় দেয়। এবার সেই শবনম আলীর ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতি নিচ্ছে মথুরার জেল কর্তৃপক্ষ।

এখনও সেই শিক্ষিকার ফাঁসির দিন ক্ষণ ঠিক হয়নি। তবে এই ফাঁসির রায় কার্যকর হলে তা হবে স্বাধীন ভারতে প্রথম কোনও নারীর মৃত্যুদণ্ড। এখন ৩৮ বছর বয়সী সেই আসামী এই মুহূর্তে রামপুর জেলে বন্দী। তিনি ২৫ বছর বয়সে সেই হত্যাকাণ্ড ঘটান।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সুত্রে জানা গেছে, ইংরেজিও ভূগোল, এই দুই বিষয়ে ডবল এম.এ. করা আমরোহার বাসিন্দা শবনমের ফাঁসির জন্য এখন প্রস্তুত ফাঁসির মঞ্চ। এখান থেকে ১৫০ বছর আগে ভারতের নারী কয়েদির ফাঁসির জন্য বিশেষ ঘর তৈরি হয়েছিল মথুরার জেলখানায়। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে সেই ঘরের ব্যবহার কোনোদিনই করতে হয়নি। এরপর স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষে এসে প্রথমবার সেই ঘরের আবার প্রয়োজন পড়েছে। ভারতের আমরোহার বাসিন্দা শবনমের ফাঁসির জন্য আবাত প্রস্তুত মথুরার সেই ঘর। এর মাধ্যমে স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই প্রথমবার কোনো নারী অপরাধীর ফাঁসির সাজা কার্যকর হতে চলেছে।

জানা গেছে, শিক্ষিকা শবনমের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন রাজ‌্যপাল এবং রাষ্ট্রপতি। এখন তার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করার পর সম্ভবত তার মৃত‌্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।

বর্তমানে তিনি রামপুর জেলা সংশোধনাগারে আছেন। সেই সংশোধনাগারের জেলার রাকেশ কুমার বর্মা জানিয়েছেন, ফাঁসির যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। নারীদের ফাঁসি দেওয়ার নিয়ম অনুসারে শবনমকে মথুরা জেলা সংশোধনাগারে স্থানান্তরিত করার জন‌্য আমরোহা জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। ভারতের মধ‌্যে একমাত্র মথুরা জেলেই মহিলাদের ফাঁসি দেওয়ার ব্যবস্থা আছে আর সেই ফাঁসি দেবেন নির্ভয়াকাণ্ডের ফাঁসুড়ে পবন জল্লাদ।

READ MORE  টাইমস্কেল ও দশমগ্রেড প্রশ্নে প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা দু'ভাগে বিভক্ত
ফাঁসির দড়িতে কলা মাখন মাখাচ্ছে পবন জল্লাদ

এই মামলার নথি থেকে জানা যায়, ইংরেজিতে ও ভূগোলে স্নাতকোত্তর করে গ্রামের একটি প্রাথমিক বিদ‌্যালয়ে লেখা পড়া করাতেন শবনম। এরই মধ‌্যে সেলিম নামের এক ব‌্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। যা নিয়ে খুব আপত্তি ছিল শবনমের পরিবারের। পরে ঘটনাক্রমে ২০০৮ সালে ১৪ এপ্রিল প্রেমিকের সঙ্গে পরিকল্পনা করে নিজের বাবা, মা, দুই ভাই, দুই বৌদি এবং ১০ মাসের ভাইপোকে খুন করেন। যাদের মোট সংখ্যা ছিল ৭।

ঘটনার শুরুর দিকে শবনম দাবি করেছিল, অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারীরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। কিন্তু পরে তিনি স্বীকার করেন, পরিবারের সদস‌্যদের মাদকজাতীয় কোনো দ্রব‌্য মিশ্রিত দুধ খাওয়ান। এরপর এই হত্যাকাণ্ড ঘটাম।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে আমরোহার নিম্ন আদালত শবনম এবং সেলিমকে মৃত‌্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছিল। পরে এটি নিয়ে আল্লাহাবাদ হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে তারা। যা গত বছরের জানুয়ারি মাসে খারিজ হয়ে যায়।

মন্ত্রনালয়ের মতামত পেলেই ৫৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ

-ডিবি আর আর।

Leave a Comment