সরকারী কর্মচারীদের জিপিএফ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

GPF হল General Provident Fund বা সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিল। সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিলে সরকারি কর্মচারীদের চাকুরী স্থায়ীকরণের পর বেতন হতে সর্বনিম্ন ৫% স্থিতি রাখা হয়। যা বাধ্যতামূলক। সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিলে জমাকৃত টাকা একজন সরকারী কর্মচারীর জন্য একটি ভবিষ্য তহবিল। যেখান থেকে বিপদে পড়লে ঋণ নেওয়া যায় বিনা সুদে। অত্র ঋণের উপর সাধারণত কোন ধরনের সুদ প্রদান করতে হয় না। শুধুমাত্র নির্ধারিত কিস্তি হারে এক কিস্তি অতিরিক্ত প্রদান করতে হয়, যা নিজের হিসাবেই জমা থাকে। নিজের জিপিএফ এ জমাকৃত অর্থ নিজ বয়স ৫২ বছর না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণভাবে উত্তোলন করা যায় না।

এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক জিপিএফ সম্পর্কিত খুটিনাটি তথ্য!

# জিপিএফ খোলার যোগ্যতা: একজন সরকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারী তার স্বীয় চাকুরীর মেয়াদ ০২ বছর পূর্ণ হওয়ার পর এই তহবিল খোলা করা বাধ্যতামূলক। হ্যা, তবে একজন সরকারী কর্মচারী ইচ্ছা করলে চাকুরির বয়স ০২ বৎসর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেও তহবিলে যােগদান করতে পারেন।

# ভবিষ্যৎ তহবিলের নমিনি মনােনয়ন : GPF এ চাঁদা প্রদানকারী তার পরিবারের সদস্য নয়, এমন কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে তার নমিনি হিসাবে মনােনয়ন করতে পারবনে না। শুধুমাত্র GPF হোল্ডার যদি অবিবাহিত হন, তবে পিতা বা মাতা, ভাই বা বােনকে নমিনি মনােনয়ন করতে পারবেন। তবে উক্ত কর্মচারী বা কর্মকর্তার বিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে পরিবারের বাহিরে করা নমিনি ব্যক্তির নমিনি সংক্রান্ত মনােনয়ন পত্র আপনা-আপনি বাতিল হয়ে যাবে।

# জিপিএফ এর চাঁদার হার : কর্মচারীর মূল বেতনের সর্বনিম্ন ৫% সর্বোচ্চ ২৫% সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিলে প্রতিমাসে কাটানো যায়।

# জিপিএফ নমিনি পরিবর্তন : সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিলের নমিনির নাম পরিবর্তন করা যায়, তবে নিজ পরিবারের সদস্যের নামে কেউ নমিনি থাকলে, বিবাহ করার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে কর্মচারীর স্ত্রী তার নমিনি হয়ে যায়।

# জিপিএফ সুদের হার : বর্তমানে সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিলের এর সুদের হার হল ১৩ শতাংশ।

READ MORE  সরকারী চাকুরীজীবীদের পেনশন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ রায় হাইকোর্টের

# অগ্রিম জিপিএফ উত্তলন : ধারাবাহিকভাবে সর্বোচ্চ ৪বার এডভান্স নেয়ার সুযােগ আছে। তবে কর্মচারীর বয়স ৫২ বৎসর পূর্ণ হলে অফেরতযােগ্য অগ্রিম এর ক্ষেত্রে নির্দিষ্টতা নেই।

# জিপিএফ এডভান্স মঞ্জুর : আবেদনকারী জিপিএফ এডভান্স বা অগ্রিমের আবেদন করলে ডেলিগেশন ফিন্যান্সিয়াল ক্ষমতা অনুযায়ী ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ অগ্রিম মঞ্জুর করে।

# অগ্রিম উত্তোলনে সুদ : অগ্রিম/এডভান্স উত্তোলন করলে এডভান্স উত্তোলিত টাকা জি.পি.এফ স্থিতি হতে সমন্বয় করা হয়। কর্মচারী যে মাসে এডভান্স উত্তোলন করেন তার পরবর্তী মাসের বেতন বিল হতে উত্তোলিত টাকায় কোন লভ্যাংশ আর পায় না।

# জিপিএফ অগ্রিম উত্তোলনের নিয়ম : অগ্রিম উত্তোলনের জন্য স্ব-অফিসে আবেদন করতে হয়। কর্তৃপক্ষ আবেদনের প্রেক্ষিতে মঞ্জুরী ইস্যু করে জিপিএফ এডভান্স বিল হিসাবরক্ষণ অফিসে প্রেরণ করলে, হিসাব রক্ষণ অফিস ব্যক্তির নির্দিষ্ট জিপিএফ একাউন্ট এর পৃষ্টায় নােট উল্লেখ করে পরিশােধ করে থাকেন।

# এডভান্স বাবদ গৃহিত অর্থ চালানে জমা দেওয়া : এডভান্স বাবদ গৃহিত অর্থ চালানে জমা দেয়া যায়। যা নিজ বেতন হতে কিস্তির মারফত আদায় করা হয়।

# এডভান্স টাকা কর্তন : অগ্রিম উত্তোলিত টাকা কর্তন করলে বিনিয়ােগ হিসাবে গণ্য হয়।

# আএডভান্স গ্রহণে স্থিতি কমে যাওয়া : উত্তোলিত অগ্রিম জি.পি.এফ স্থিতি হতে বিয়ােগ হয় বিধায় স্থিতি কমে যায়।

# বছরের মাঝখানে জিপিএফ এর টাকা কমানাে বাড়ানাে : বছরের মাঝখানে সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিলের টাকা কমানাে বাড়ানাে যায় না। তবে বিশেষ কারণে বছরের মাঝখানে টাকা কমানাে বাড়ানাে যায়।

# জি.পি.এফ চূড়ান্ত উত্তোলনের নিয়ম : সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিল পুরোপুরিভাবে তুলে নেওয়ার জন্য নির্ধারিত ফরম পূরণ পূর্বক আবেদনকারীকে চূড়ান্ত উত্তোলনের জন্য আবেদন করতে হয়। স্ব-স্ব কর্তৃপক্ষ আবেদনের ভিত্তিতে হিসাবরক্ষণ অফিস কর্তৃক চূড়ান্ত উত্তোলনের ক্ষমতা ইস্যু করার জন্য পত্র জারী করেন। এরপর হিসাবরক্ষণ অফিস সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সমুদয় জিপিএফ হিসাবের সুদ ও আসল নির্ধারণ পূর্বক অথরিটি ইস্যু করেন। সেই অথরিটির ভিত্তিতে স্ব-স্ব সরকারি কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত পরিশােধের নিমিত্তে মঞ্জুরী সহ বিল হিসাব রক্ষণ অফিসে দাখিল করে। সবশেষে হিসাবরক্ষণ অফিস জি.পি.এফ বিল পুরোপুরিভাবে পরিশােধ করে।

READ MORE  এসিআর কী? সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এসিআর এর ইতিহাস

শিক্ষক কর্মচারীদের শ্রান্তি বিনোদন ভাতার সকল খুটিনাটি

পরিপত্র, প্রজ্ঞাপন, গেজেট, অফিস আদেশ, আইন, বিধি, অধ্যাদেশ কী?

প্রাথমিকে ২৫ হাজার ৩০০ ও ১০ হাজারের বিশাল নিয়োগ

দৈনিক বিদ্যালয় এর নিউজ নিয়মিত পেতে subscribe বাটনে চাপ দিতে হবে। google থেকে সরাসরি এই শিক্ষা বিষয়ক পত্রিকার নিউজ পড়তে dainikbidyaloy.com লিখে সার্চ দিতে হবে। আর আপনার লেখা পাঠাতে হলে [email protected] ইমেইলে সেন্ড করতে হবে।

Leave a Comment